আজ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবটি শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণের ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত এই শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা। কপিলাবস্তুর রাজপুত্র সিদ্ধার্থ নগর ভ্রমণে পরিচিত হন জরা, ব্যাধি, দুঃখ ও মৃত্যুর সাথে। মানুষের জীবনের এই অনিবার্য নিয়তি তাকে দুঃখভারাক্রান্ত করে তোলে এবং এর কারণ অন্বেষায় একদিন তিনি রাজঐশ্বর্য, স্ত্রী-সন্তান তথা সাংসারিক মায়ার বন্ধন ছিন্ন করে কঠিন সাধনায় লিপ্ত হন বোধিবৃক্ষতলে।
সাধনায় সিদ্ধি লাভ করে তিনি তাঁর দর্শন ও ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তাঁর ধর্মের মূলবাণী অহিংসা, মৈত্রী ও সর্বজীবে করুণা। বুদ্ধ প্রবর্তিত বৌদ্ধ ধর্ম ভারত উপমহাদেশ ছাড়িয়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিস্তার লাভ করে। এ ধর্ম সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজন্যবর্গের আনুকূল্যও লাভ করে। বৌদ্ধদর্শন, বৌদ্ধসংস্কৃতি উপমহাদেশের দর্শনচিন্তা ও সংস্কৃতি সাধনা সমৃদ্ধ করেছে।
বাংলাদেশেও বৌদ্ধ ধর্ম বিকশিত ও সমৃদ্ধ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৌদ্ধ পুরাকীর্তি ও ঐতিহ্যের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে এখনো।
দেশের সমতল অংশ ও পাহাড়ে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ।
বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতি বহুমাত্রিক। উদারতা, সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্ব চেতনা বাঙালি সমাজের বৈশিষ্ট্য। নানা ধর্ম, মত ও চিন্তার মানুষ মিলেমিশে সুখে দুঃখে বসবাস করে আসছে; সাম্প্রতিককালে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা সম্প্রীতির সমাজে মালিন্যের ছাপ রাখলেও এ ধরনের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আমাদের সমাজে স্থায়ী হবে না। বৌদ্ধ ধর্মের মূল বাণী অহিংসা ও মৈত্রী। সকল ধর্মেই মানবতা, শুভ ও কল্যাণচিন্তার কথা বলা হয়েছে। সমাজ থেকে হিংসা, দ্বেষ মুছে ফেলে মানবের হিতে ব্রতী হতে পারলে অহিংসা ও মৈত্রীপূর্ণ সমাজ গঠন অসম্ভব নয়।
বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে, এটি জাতীয় সংহতি চেতনা পুষ্ট করছে।
শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আমরা দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ভাইবোনদের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যমত জরুরি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ...
পাঠকের মতামত